কাতারের আমিরের ঐতিহাসিক সিরিয়া সফর: পুনর্গঠনে দোহার অঙ্গীকার
- By Jamini Roy --
- 01 February, 2025
বাশার আল-আসাদের পতনের পর প্রথমবারের মতো কোনো আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে গেলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে পৌঁছান তিনি। সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা তাকে স্বাগত জানান। এ সময় সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বাশির, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুরহাফ আবু কাসরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্লেষকদের মতে, শেখ তামিমের এই সফর কেবল সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়, বরং সিরিয়ার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কাতারের ক্রমবর্ধমান ভূমিকার ইঙ্গিত বহন করছে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ এবং দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার পর, দেশটির পুনর্গঠনে কাতার যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে যাচ্ছে, এই সফর সেটিরই ইঙ্গিত দেয়।
দামেস্কে পৌঁছে কাতারের আমির সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। এই বৈঠকে সিরিয়ার পুনর্গঠন, দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
বৈঠকে শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি বলেন, "সিরিয়ার পুনর্গঠনে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাই। কাতার সবসময় সিরিয়ার জনগণের পাশে থাকবে এবং তাদের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।"
কাতারের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে দোহা বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। বিশেষ করে, জ্বালানি, পরিবহন ও আবাসন খাতে কাতারের বিনিয়োগ এবং সহায়তা কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
এই সফরের মাধ্যমে কাতার ও সিরিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কাতার দামেস্ক থেকে দূতাবাস সরিয়ে নেয় এবং আসাদ সরকারবিরোধী বিদ্রোহীদের সমর্থন দেয়। তবে, বাশার আল-আসাদের পতনের পর কাতার নতুন নেতৃত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে সিরিয়ায় পুনরায় দূতাবাস চালু করেছে।
শেখ তামিমের সিরিয়া সফর মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক সমীকরণেও একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা ফেরাতে এবং অঞ্চলটিকে পুনর্গঠনে কাতারের আগ্রহ এ সফরের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কাতারের এই পদক্ষেপ শুধু সিরিয়াকেই নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে, উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে কাতারের কূটনৈতিক অবস্থান আরও দৃঢ় হবে।